বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪, ০৩:১৮ অপরাহ্ন
আজকের দিগন্ত অনলাইন ডেস্ক :— শীতকালের শাকসবজিতে রয়েছে শত গুণের উপকারি। ফুলকপির উল্লেখযোগ্য পুষ্টি উপাদান, ক্যালসিয়াম, লৌহ ভিটামিন বি১ ও বি২। ক্যালসিয়াম হাড়ের গঠনে, মাংসপেশির সঙ্কোচনজনিত ব্যথা দূরীকরণে আর লৌহ রক্ত তৈরিতে সাহায্য করে। বাজারে উপস্থিত আরেকটি পছন্দের শস্যদানা জাতীয় সবজি হচ্ছে মটরশুঁটি। মটরশুঁটিতেও রয়েছে ফুলকপির মতো প্রয়োজনীয় পুষ্টি উপাদান ও ভিটামিন। প্রতি ১০০ গ্রাম ফুলকপি ও মটরশুঁটিতে ক্যালসিয়ামের পরিমাণ যথাক্রমে ৪০ মি.গ্রা. ও ২৬ মি.গ্রা. এবং লৌহের পরিমাণ উভয় ক্ষেত্রেই ১.৫ মি.গ্রা.। লালশাক ভিটামিন ‘এ’-তে ভরপুর। লালশাক নিয়মিত খেলে দৃষ্টিশক্তি ভালো থাকে এবং অন্ধত্ব ও রাতকানা রোগ প্রতিরোধ করা যায়। এর অ্যান্টি অক্সিডেন্ট ক্যান্সার প্রতিরোধে সাহায্য করে ও রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রা কমায়, যা হৃদরোগের ঝুঁকি হ্রাস করে। লালশাকের বিটাক্যারোটিন হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি হ্রাস করে। ক্যালরির পরিমাণ কম থাকায় ডায়াবেটিস রোগীদের জন্যও লালশাক যথেষ্ট উপকারী। এ ছাড়াও এটি শরীরের ওজন হ্রাস, পরিপাকে সহায়তা এবং কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে।
গাজর রূপেগুণে অনন্য একটি সবজি। খাবার হিসেবে গাজরের ব্যবহারও নানাবিধ। কাঁচা ও রান্না করা উভয় অবস্থাতেই এটি গ্রহণ করা যায়। গাজরে রয়েছে সর্বোচ্চ পরিমাণ বিটাক্যারোটিন। প্রতি ১০০ গ্রাম গাজরে এই বিটাক্যারোটিনের পরিমাণ প্রায় ১৮৯০ মাইক্রোগ্রাম (সূত্র : বিদেশি ম্যাগাজিন) এবং ক্যালসিয়াম প্রায় ৮০ মি.গ্রা.। তাছাড়া গাজরে রয়েছে লাইকোপেন নামের উপাদান, যা ক্যানসার প্রতিরোধে সহায়ক। গাজরের গুণ অনেক। গাজর ত্বক ও চুলকে রোদের ক্ষতিকর প্রভাব থেকে রক্ষা করে। তবে গাজর ত্বকে বা চুলে মেখে লাভ হবে না। গাজর কাঁচা খেতে হয় কিংবা অল্প সিদ্ধ করে রান্না করতে হবে। গাজর মহিলাদের ছত্রাক সংক্রমণের ঝুঁকি কমায়। চোখের ছানি, রাতকানা, হৃদরোগসহ কিছু ক্যান্সার প্রতিরোধে গাজর ভূমিকা রাখে। এই সময়ের আরো একটি আলোচিত সবজির নাম টমেটো। প্রোস্টেট ক্যান্সার প্রতিরোধে টমেটো ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। টমেটোর মধ্যে রয়েছে অ্যান্টি অক্সিডেন্ট উপাদান লাইকোপেন। এই লাইকোপেন দেহকোষ থেকে বিষাক্ত ফ্রি রেডিক্যালকে সরিয়ে প্রোস্টেট ক্যানসার প্রতিরোধে সহায়তা করে। গবেষকরা বলেছেন, যারা সপ্তাহে অন্তত চারবার টমেটো খায় তাদের ক্ষেত্রে প্রোস্টেট ক্যানসারের ঝুঁকি ২০ শতাংশ কমে যায়, আর সপ্তাহে ১০ বার খেলে ঝুঁকি ৫০ শতাংশে নেমে আসে। তবে এই উপকার পেতে হলে তারা পাকা টমেটো এবং রান্না করা কিংবা সস করা টমেটো খাওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন।
শিমে অন্যান্য সবজির মতো প্রচুর পরিমাণে ক্যালসিয়াম আছে। এর অ্যান্টি অক্সিডেন্ট হার্টের জন্য ভালো এবং প্রতিরোধ করে ক্যান্সারও। এ ছাড়া প্রচুর তন্তু থাকার ফলে কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে এবং কমায় রক্তের কোলেস্টেরল। তবে শিমের চেয়ে বীজ বেশি পুষ্টিকর। আমিষের পরিমাণ শিমের চেয়ে বীজে ছয় গুণ বেশি। খাদ্যশক্তি শিমের চেয়ে বীজে সাত গুণ বেশি। মোট খনিজ পদার্থ শিমের চেয়ে বীজে তিন গুণ বেশি। আয়রনের পরিমাণ শিমের চেয়ে বীজে দ্বিগুণ বেশি। শিমে আমিষের পরিমাণ কচুশাক, লালশাক ও মটরশুঁটি ছাড়া সব শাকসবজির চেয়ে বেশি আছে। ক্যালসিয়ামের পরিমাণ কচুশাক ও লালশাক ছাড়া সব শাকসবজির চেয়ে কয়েক গুণ বেশি আছে। ভিটামিন, অ্যান্টি অক্সিডেন্ট ও মিনারেল-সমৃদ্ধ জনপ্রিয় শীতকালীন সবজি মুলা দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে। মুলায় খাদ্যশক্তি কম, তন্তু বা ফাইবার বেশি এবং আয়রন, ক্যালসিয়াম, পটাশিয়াম ইত্যাদি থাকার কারণে চল্লিশোর্ধ্ব স্বাস্থ্য সচেতনদের জন্য এটি একটি আদর্শ খাবার হতে পারে। যারা ডায়েটিং করছেন তাদের জন্য মুলা একটি দরকারি খাবার। মুলার অ্যান্টি অক্সিডেন্ট লিউটিন চোখের দৃষ্টিশক্তি ঠিক রাখে। ভিটামিন বি৬, রিবোফ্ল্যাভিন মুখের ঘা প্রতিরোধ করে। কাঁচা মুলা থেকে অ্যাসকরবিক অ্যাসিড গ্রহণ করা সম্ভব, যা মাড়ির সুস্থতা রক্ষা করবে। আর ফলিক অ্যাসিড দেহের রক্ত বাড়ায়। ত্বকের সজীবতা রক্ষায় বিটাক্যারোটিন বিশেষভাবে সহায়তা করে। মুলার অ্যান্টি অক্সিডেন্ট-ফ্ল্যাভনয়েডস হূিপণ্ডের রক্তনালী তথা হূদরোগ প্রতিরোধে সাহায্য করে। এ ছাড়া খাদ্য থেকে প্রাপ্ত কোলেস্টেরল শোষণে বাধা দেওয়ার মাধ্যমে রক্তের কোলেস্টেরল মাত্রা নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে মুলা।
ডা. সজল আশফাক নাক কান ও গলা বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক।
=== সূত্র: বিভিন্ন.কম ===
আমরা জনতার সাথে......“আজকের দিগন্ত ডট কম”
© সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত “আজকের দিগন্ত ডট কম”। অনলাইন নিউজ পোর্টালটি বাংলাদেশ তথ্য মন্ত্রনালয়ে জাতীয় নিবন্ধন প্রক্রিয়াধীন।
Leave a Reply